Thursday, March 28, 2024
Homeব্লগিং ও SEO'ব্লগ' বানিয়ে কিভাবে মাসে লক্ষাধিক আয় সম্ভব - জেনে নিন!!

‘ব্লগ’ বানিয়ে কিভাবে মাসে লক্ষাধিক আয় সম্ভব – জেনে নিন!!

শুরুতেই আপনাদের জানিয়ে রাখি, আজকের দিনে বাড়িতে বসে অনলাইনে কাজ করে বিপুল অর্থ উপার্জনের যে সমস্ত পথ ও পদ্ধতি আছে তার মধ্যে অন্যতম বৃহত্তম ক্ষেত্র হল এই ব্লগিং। এই ব্লগ ব্যাপারটি কি, কিভাবে সমস্ত কিছু সেট আপ করতে হয় তার সমস্ত বিবরণ নিয়ে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব। আশা করি, এই সম্বন্ধে আপনার একটি পরিস্কার ধারণা তৈরি হয়ে যাবে, কোনো কোডিং ও টেকনিক্যাল ধারণা ছাড়াও আপনি এই ব্লগ বানিয়ে তা ম্যানেজ করে মাসিক ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

ব্লগ কি:

আপনারা সবাই ওয়েবসাইট জানেন, আমরা গুগলে কোনো তথ্য সার্চ করে তা পড়ার জন্য কোনো না কোনো ওয়েবসাইটে যাই। যেগুলো আমরা ব্যবহারিক ক্ষেত্রে ওয়েবসাইট বলে থাকি সেগুলোই প্রকারভেদে ব্লগ বলা হয়। যেমন  google, yahoo, bing, Facebook, amazon এগুলো  ওয়েবসাইট, আবার  w2earnmoney, sportskeeda, bollywoodunion, lyricsmint ইত্যাদি হল ব্লগ। ব্লগও ওয়েবসাইটের মতোই হয় শুধু পার্থক্য হল ব্লগ নিয়মিতভাবে তার লেখন সামগ্রী আপডেট করে। মানে হল, নিত্য নতুন তার ব্লগের বিষয়বস্তু অনুসারে পোস্ট লিখে ব্লগটিকে আপডেট করে। অন্য আর একটি জিনিস হল, যে বিষয়বস্তুর উপর ফোকাস করে ব্লগ বানানো হয়, ব্লগের সমস্ত পোস্ট তার উপর ভিত্তি করেই লেখা হয় বা তার সাথে লিঙ্ক রেখে। উদাহরণস্বরূপ, যেমন
bollywoodunion.com ব্লগটি খুললে আপনি শুধু বলিউডের সমস্ত তথ্য ও খবরাখবর পাবেন, ওখানে ক্রিকেটের লেখা পাবেন না। আবার, sportskeeda.com  ওয়েবসাইটটি খুললে ওখানে শুধুমাত্র খেলার খবরই পাবেন।

ব্লগের বিষয়বস্তু কিভাবে নির্বাচন করব:

প্রথমত, আমরা ব্লগ কেনো তৈরি করব – এর উত্তর হল টাকা কামানোর জন্য। তাই ব্লগটিকে ব্যবসায়িক রূপ দিয়ে বানাতে হবে। তাই, এক্ষেত্রে কি বিষয়বস্তুর উপর ব্লগ বানাবো সেটা নির্বাচন করা খুব জরুরি। আপনাকে সেরকম একটি ভালো বিষয় খুঁজে নিতে হবে, যে বিষয়বস্তু মানুষ পড়তে ভালোবাসে। তবেই তারা আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগে আসবে এবং আপনার লেখা পোস্ট পড়বে। এই ব্যাপারটিকে দুটো ভাগে ভাগ করে নিন –
 (১) কোন বিষয়বস্তু আপনার পছন্দ ও আগ্রহ, যেটা আপনি পড়তে, লিখতে ও জানতে ভালোবাসেন এবং যা নিয়ে আপনার জ্ঞান অন্যদের থেকে তুলনামূলকভাবে বেশি, সেই বিষয়ে আপনি ব্লগ তৈরি করতে পারেন, এতে কাজ করতে আপনার অনেক সাবলীল মনে হবে এবং কখনো বোরিং লাগবে না।
 (২) কোন বিষয়ে মানুষ বেশি সার্চ করে বা মানুষ বেশি জানতে ভালোবাসে। যে বিষয়ে বেশি সার্চ হয় সেই বিষয়বস্তু অনুসারে ব্লগ বানালে আপনার ব্লগ অনেকে পড়বে এতে আপনার ব্লগের ট্রাফিক বাড়বে।
 ব্লগের কত রকম বিষয়বস্তু হতে পারে তা নিয়ে পরে আমি একটি পোস্ট পাবলিশ করবো। এছাড়াও, যদি আপনার কোনো ইউনিক আইডিয়া থাকে সেটাও ট্রাই করতে পারেন।

ব্লগ সেট আপ কিভাবে করবো:

প্রাথমিকভাবে ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য দুটি জিনিসের দরকার হয় domain  ও hosting বা server। ডোমেইন হল ওয়েবসাইটের নাম বা এড্রেস, যেটাতে ক্লিক করে বা যে এড্রেসে গিয়ে আমরা ওই ওয়েবসাইটটি দেখতে পারি। যেমন আমার এই ব্লগের এড্রেস www.w2earnmoney.com । এটা হল আমার এই ব্লগের ডোমেইন। ডোমেইন ও হোস্টিং আপনি siteground ইত্যাদি ওয়েবসাইট থেকে কিনতে পারেন। যখন আপনি এই ব্লগের নাম পছন্দ করবেন তখন খেয়াল রাখবেন আপনার ব্লগের বিষয়বস্তুর সাথে আপনার ডোমেন নামের জন্য ম্যাচিং থাকে। এছাড়াও ডোমেইন নাম ছোট – যাতে লোকের মনে রাখতে সুবিধে হয়, আকর্ষণীয় হয়। নামের মাঝখানে হাইফেন, সিম্বল, নম্বর এইসব না থাকে, তবে অন্যের মনে রাখতে অসুবিধে হবে। এরপর দরকার হয়  server বা  hosting এর, ওয়েবসাইটের যাবতীয় পোস্ট ও লেখা, ছবি যেখানে স্টোর থাকবে। যেমন, ফোনের ক্ষেত্রে মেমোরি কার্ড কাজ করে। যখনই কেউ ব্লগ খুলবে এই সার্ভারে সঞ্চিত সব তথ্য ওই ওয়েবসাইটটিতে দেখা যাবে।

আপনি যদি ব্লগ একদম নতুন শুরু করছেন সেক্ষেত্রে হোস্টিং কেনার সময় সবচেয়ে সস্তার প্ল্যান কিনবেন, কারণ শুরুতে আপনি শিখছেন ও নতুন ব্লগে ভিসিটর বা ট্রাফিক কম হয়। পরে ট্রাফিক বাড়লে ও ব্লগ থেকে ইনকাম আসা শুরু হলে প্ল্যান আপগ্রেড করিয়ে নেবেন।

ডোমেইন ও হোস্টিং কেনার পর  WordPress নামে একটি প্ল্যাটফর্ম আছে যার ড্যাশবোর্ড ব্যবহার করে আপনি আপনার পোস্ট লিখবেন, ছবি লাগাবেন, আপনার ব্লগ কাস্টমাইজ করবেন। এই wordpress plugin ইনস্টল করে নেবেন, এই অপশনটি হোস্টিং কেনার পর ওয়েব হোস্টিং ম্যানাজমেন্টে গিয়ে পেয়ে যাবেন।

এরপর আপনার ব্লগের জন্য একটি ভালো থিম বেছে নিন। থিম ফ্রি ভার্সন ও পেড দুটোই পাওয়া যায়। তবে পেড ভার্সনের ডিজাইন, টেকনিক্যাল সাপোর্ট ও কাস্টমাইজেশন অনেক ভালো। WordPress এর জন্য বেস্ট ভালো ফ্রি থিম astra, oceanwp ইত্যাদি।এগুলো আপনি ড্যাশবোর্ডের থিম সেকশনে পেয়ে যাবেন।

free theme for blog seo friendly লিখে গুগলে সার্চ করলে অনেক ওয়েবসাইট আছে যেখান থেকে একটি ভালো থিম বাছাই করে নেবেন আপনার ওয়েবসাইটের জন্য।ব্লগের থিম হল সেই জিনিস যা ব্লগের বাহ্যিক ডিজাইন, যেটা ব্লগের বাহ্যিক ভিউ কে আকর্ষণীয় করে তোলে। থিম থেকে বোঝা যায় ব্লগের মেনুবার, সাইডবারের পজিশন, পোস্ট গুলো ব্লগে কিভাবে শো করবে। যেমন আপনি নিউজ আর্টিকেলের ব্লগ হলে আলাদা ও ভিডিও ব্লগ হলে আলাদা থিম ব্যবহার করবেন। এই থিম  seo friendly হওয়া প্রয়োজন, তাহলে গুগল অনেক তাড়াতাড়ি এই ওয়েবসাইটটিকে রাঙ্কিং করায়, এতে ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বাড়ে।

ব্লগের জন্য ভালো থিম লাগানোর পর কমপক্ষে ১৫ টি পোস্ট নিজে থেকে লিখুন। এরপর লক্ষ্য করুন ধীরে ধীরে আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আসছে কি না।

ব্লগ থেকে টাকা উপার্জনের পদ্ধতি:

গুগলের একটি এড নেটওয়ার্ক প্রোগ্রাম আছে যার নাম হল গুগল অ্যাডসেন্স। আপনার ইমেইল আইডি থেকে এই গুগল অ্যাডসেন্সের একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে সেখানে আপনার ওয়েবসাইটটি সাবমিট করতে হবে। গুগল সব ক্রাইটেরিয়া যাচাই করার পর আপনাকে অ্যাপ্রুভাল দেবে। অ্যাপ্রুভাল পেলে আপনার ওয়েবসাইটে গুগলের অ্যাড শো হবে। আর ওয়েবসাইটে এই অ্যাড শো করিয়ে আপনি টাকা উপার্জন করবেন। ওয়েবসাইটের ট্রাফিক যত বেশি হবে, আপনার অ্যাডের উপর ইমপ্রেশন ও ক্লিক তত বেশি হবে এবং তত বেশি আপনার উপার্জন বাড়বে।কিন্তু খেয়াল রাখবেন কখনো নিজে নিজেই আপনার ব্লগের অ্যাড এ ক্লিক করবেন না। ব্লগে প্রতিদিন ১০০-১৫০ জন ভিউ হওয়া শুরু হলে আপনি গুগল অ্যাডসেন্সের অ্যাডের জন্য আপনার ওয়েবসাইটটি সাবমিট করবেন।

অন্যান্য জনপ্রিয় মেথড হল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে। কোনো কোম্পানির প্রোডাক্ট আপনি আপনার সাইটে প্রমোশন করলেন। আপনার দেওয়া লিঙ্ক থেকে কোনো কাস্টমার যদি কিছু কেনে, তখন কোম্পানি থেকে আপনি কমিশন পাবেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে আমার এই আর্টিকেল টি পড়তে পারেন।

এছাড়াও আপনি আপনার সাইটে নিজের কোনো প্রোডাক্ট যেমন ইবুক বা অনলাইন কোর্স ইত্যাদি বিক্রি করেও যথেষ্ট টাকা রোজগার করতে পারবেন।

ফ্রি ডোমেইন ও হোস্টিং:

যারা চাইছেন যে শুরুতে টাকা খরচ না করে ফ্রি তে ডোমেইন ও হোস্টিং নিয়ে ব্লগ বানাতে, তারপর সব শিখে গেলে ও ইনকাম শুরু হলে ডোমেইন ও হোস্টিং কিনে ব্লগ বানাতে – তাও সম্ভব। গুগলের  www.blogger.com ফ্রি ডোমেইন ও হোস্টিং প্রদান করে থাকে। তবে সেক্ষেত্রে ডোমেইন নাম .blogspot.com হয়ে যায়। আর ফ্রি হোস্টিং এর ক্ষেত্রে ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বাড়লে ওয়েবসাইটের পেজ দেরিতে খোলে – এই সমস্ত লিমিটেশন আসে। আপনি গুগল ব্লগারের ফ্রি ডোমেইন ও হোস্টিং নিয়ে প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু করতে পারেন। পরে ডোমেইন কিনে এর সাথে রিডাইরেক্ট করে দিলে আপনার ডোমেইন নাম  .com এ চলে আসবে। এর জন্য আপনাকে জিমেইল আইডির দ্বারা  www.blogger.com এ গিয়ে লগ ইন করুন ও ব্লগ বানিয়ে নিন।

ব্লগের ভাষা নির্বাচন:

ব্লগ লেখার ভাষা যদি ইংরেজি হয় খুবই ভালো, আপনি যদি ভালো ইংরেজিতে আপনার ব্লগের পোস্ট লিখতে পারেন, তাহলে গোটা বিশ্ব জুড়ে ট্রাফিক পেয়ে যাবেন। ইংরেজিতে ব্লগে কম্পিটিশন একটু বেশি ও ওয়েবসাইট রাঙ্কিং করতে অনেক পরিশ্রম করতে হয় কিন্তু ভালো ওয়েবসাইট বানালে উপার্জনও বেশ ভালো। এছাড়া আপনি স্থানীয় ভাষা যেমন হিন্দি ও বাংলাতেও বানাতে পারেন, গুগলের অ্যাডসেন্স প্রোগ্রাম বাংলা ও হিন্দি ভাষা সাপোর্ট করে। হিন্দিতে ব্লগ বানালেও আপনি ভালো ট্রাফিক পেয়ে যাবেন, হিন্দিতে পাঠকের সংখ্যা অনেক বেশি। বাংলাতে কম্পিটিশন যেমন কম তেমন ট্রাফিক ও একটু কম। যেটাতে আপনি সাবলীল সেখানেই বানান। আর অন্য কোনো ভাষা হলে গুগলের অ্যাডসেন্স প্রোগ্রামের ভাষাতে ওই ভাষাটি আছে কিনা তা চেক করে নেবেন।

এটা আমি ব্লগ বানানোর উপর একটি বেসিক ধারণা দিলাম। এরপর আস্তে আস্তে এক একটি টপিকের উপর সম্পুর্ন বিস্তারিত আলোচনা করব। যেমন ওয়ার্ডপ্রেস কিভাবে ইনস্টল করতে হয়, থিম কিভাবে আপলোড করতে হয়, ব্লগারে কিভাবে ব্লগ বানাতে হয়, অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট কিভাবে খুলতে হয়, কপিরাইট বিহীন ছবি কোথা থেকে ডাউনলোড করব, ব্লগের টপিক কি কি হত পারে- ব্লগের যাবতীয় পোস্ট আমি এক একটি করে পোস্ট করব। আপনারা আমার এই ওয়েবসাইটটিতে নজর রাখুন ও ইমেইল সাবস্ক্রিপশন করে রাখুন, নতুন কোনো পোস্ট করলে আপনি তার নোটিফিকেশন পেয়ে যাবেন।

RELATED ARTICLES

1 COMMENT

  1. বেশ সুন্দর করে লিখেছেন। আপনার সাইট টাও সুন্দর।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

‘খাতা’ তৈরি করে ব্যবসা

আজকের দিনে খাতার ব্যবহার স্কুল-কলেজ, অফিস- আদালত , দোকান - পত্র সর্বত্রই সারাবছর আছে।  তাই,  আমরা লাইন টানা,  সাদা,  বিঞ্জানের প্র্যাকটিক্যাল খাতা,  হিসাব পত্রের...
- Advertisment -

Most Popular