Thursday, March 28, 2024
Homeঅনলাইন আয়অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো ?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো ?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে অনেক টাকা আয় করা সম্ভব। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন ধৈর্য, পরিশ্রম ও উপযুক্ত প্রশিক্ষণের। আজকের দিনে যারা বাড়িতে বসে অনলাইন থেকে কাজ করে টাকা রোজগার করতে চায়, তারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর উপর বিশেষ আগ্রহ রাখে। বিশেষ করে কলেজ যাওয়া পড়ুয়া, চাকরি প্রার্থী বা আরো অনেকেই যারা অনলাইন থেকে কিছু রোজগার করে নিজের খরচ চালাতে চায় ও পরবর্তীকালে নিজের ক্যারিয়ার হিসেবেও এই পথকে বেছে নিতে চায়।

অনলাইনে আয় করার যেসব জনপ্রিয় পদ্ধতি আছে, তার মধ্যে অন্যতম হল এফিলিয়েট মার্কেটিং।এর সাহায্যে আপনি অসীম রেভেনিউ(আয়) জেনেরেট করতে পারবেন। কিন্তু এর জন্য আপনাকে এই কাজে যথেষ্ট পেশাদারিত্ব দেখাতে হবে। আমরা নিচে এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্বন্ধিত সমস্ত বিষয় স্টেপ বাই স্টেপ আলোচনা করবো। মন দিয়ে, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন। প্রথমেই বলে রাখি, এফিলিয়েট মার্কেটিং কে ক্যারিয়ার হিসেবে গড়ে তোলা খুব সহজ কাজ নয়, তবে ধৈর্য্যের সাথে পরিশ্রম করলে একদিন আপনি খুব ভালো রোজগার করতে পারবেন। আসুন জেনে নিই একজন সফল এফিলিয়েট মার্কেটারের স্ট্র্যাটেজি ও যাবতীয় তথ্য।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি ❓

মার্কেটিং হল আপনি যখন কোনো কোম্পানির (মার্চেন্ট) পণ্য বা সার্ভিসের প্রচার করবেন, প্রমোশন করবেন এবং তার জন্য ক্রেতা তৈরি করবেন। এই মার্কেটিং কাজটি আপনি অনলাইনের মাধ্যমে করলে তাকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলা হয়। এখন, ডিজিটাল মার্কেটিং এর সাহায্যে যদি আপনি কোনো কোম্পানির পণ্য বা সার্ভিস অনলাইনে প্রমোশন করেন এবং তার থেকে সেলস জেনারেট হয় তখন কোম্পানি আপনাকে একটি সেলস কমিশন দেয় এটাকেই মূলত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলা হয়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে চাই !

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে চাই !! যদি আপনি এই ইন্ড্রাস্ট্রিতে নিজের মাটি শক্ত করে ধরে রাখতে চান , তাহলে এই কাজের সাথে আপনার পেশাদারিত্ব থাকা দরকার। তাই এই কাজ সম্পর্কিত সমস্ত অনুভব, ধারণা আপনাকে রাখতে হবে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার আগে এ নিয়ে তিনটি বেসিক ধারণার টপিক জেনে নিই।

১. নিশ

নিশকে সহজ ভাষায় প্রোডাক্ট ক্যাটাগরি বা ইন্ড্রাস্ট্রি বলা যায়। যেমন বাজারে গেলে মিষ্টির দোকান, ফুলের দোকান, জুতোর দোকান। ঠিক একইভাবে অনলাইন ও এই সমস্ত ক্যাটাগরিতে ওয়েবসাইট ও প্রোডাক্ট পাওয়া যায়। অনলাইনের ভাষায় এই প্রোডাক্ট ক্যাটগরিকে আলাদা আলাদা করে বোঝাতে নিশ শব্দটির ব্যবহার হয়ে থাকে। যেমন, কুকিং, স্পোর্টস, ইবুক, মোবাইল ইত্যাদি সব এক একটি নিশ। একটি নিশের মধ্যে সাব নিশও আছে, যেমন স্পোর্টস নিশ হল এবার তার সাব নিশ হল ফুটবল তার সাব নিশ হল ফুটবল কিট, স্পোর্টস সু ইত্যাদি। স্পোর্টস > ফুটবল > ফুটবল কিট। যত আপনি সাব নিশে যাবেন তত আপনার টার্গেট প্রোডাক্টের উপর ফোকাস করা সহজ হবে।

২. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট

আপনার পছন্দের নিশ অনুযায়ী আপনি ভরপুর প্রোডাক্ট পেয়ে যাবেন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে। এর জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট করে গুগলে সার্চ করতে পারেন এবং গুগল থেকে এই সমস্ত সাইট নিয়ে যথেষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। তবে বেশ কিছু নামী সাইটের নামী সাইটের মধ্যে অ্যামাজন উল্লেখযোগ্য। অ্যামাজনের মার্কেটপ্লেস আজ গোটা বিশ্বজুড়ে এবং এর প্রোডাক্ট লিস্ট ও ভান্ডার অনেক বড়ো। এছাড়া এর বেশির ভাগ পণ্যই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগামে যুক্ত। এছাড়াও আপনি clickbank.com ,linkshare, shareasale, shopify, clicksure, moreniche.com, Cj.com ইত্যাদি ওয়েবসাইটে কাজ করতে পারেন। আপনার পছন্দের নিশ অনুযায়ী প্রোডাক্টের জন্য পছন্দের ওয়েবসাইট খুঁজে নিতে হবে।

(৩) কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করবেন

প্রথমেই বলে রাখি, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করার কোনো সীমা পরিসীমা নেই। আপনি যত খুশি কোম্পানির প্রোডাক্ট প্রমোট করে ইনকাম জেনেরেট করতে পারেন। আপনার প্রমোট করা লিঙ্ক থেকে কেউ কিছু কিনলে সেখান থেকে আপনি কমিশন পেয়েই যাবেন। এটা শুনতে অনেক সহজ মনে হলেও অতোটা সহজ নয়। প্রোডাক্ট প্রমোট করার জন্য প্রয়োজন স্কিলের। সাধারণত সফল এফিলিয়েট মার্কেটার দুই পদ্ধতিতে প্রোডাক্টের প্রমোশন করে।

প্রথমত, যে প্রোডাক্টটি আপনি বিক্রি করতে চান, তার সেলস পেজ ডাইরেক্ট কাস্টমার দের পাঠিয়ে, একে ডাইরেক্ট মার্কেটিং বলে। দ্বিতীয়ত, একটি সেলস ফানেল বানিয়ে – কাস্টমার দের প্রোডাক্ট সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে, রিভিউ পাঠিয়ে তারপর সেলস পেজে নিয়ে আসা। সেলস ফানেলের মাধ্যমে মার্কেটিং এ আপনার কাস্টমার কনভারসন রেট ভালো। এরপর এই পদ্ধতিতে কাজ করতে গেলে আপনাকে তিনটি জিনিসের উপর ফোকাস করতে হবে – (১) কাস্টমার চেনা (২) তাদের সেলস পেজে নিয়ে আসা (৩) কনভারসন টেকনিক। এসব নিয়ে আমরা নিচে ডিটেলসে এ জানাবো। তার আগে, আপনার মধ্যে তিনটি গুণ থাকা দরকার যেগুলো আপনাকে ভালো ইনকাম জেনেরেট করতে সাহায্য করবে। সেগুলো হল –

(ক) সময়

আপনাকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ সাফল্য পেতে হলে, যথেষ্ট পরিমাণে এই কাজের উপর সময় দিতে হবে। কাজ করার প্রথম মাস থেকেই ইনকাম নাও আসতে পারে, প্রমোট করা লিঙ্ক বিল্ড আপ হতে একটু সময় লাগে, তাই খুব ধৈর্য্যের সাথে কাজ করতে হবে। তবে নিশ্চিত ধীরে ধীরে ইনকাম খুব বাড়তে থাকে। এছাড়াও আপনাকে প্রতিটি প্রযুক্তির আপডেট রিসার্চে সময় নিবেশ করতে হবে।

(খ) কৌশল

আপনাকে এই ইন্ড্রাস্ট্রিতে প্রতিযোগীদের সাথে টেক্কা দিয়ে কাজ করতে হলে আপনাকে অনেক বেশি কৌশলী হতে হবে। যত বেশি আপনি প্রোডাক্ট প্রমোট করার নতুন নতুন কৌশল বের করতে পারবেন, তত বেশি আপনার কাজ সহজ হবে। এতে একদিকে বিজনেস আপ টু ডেট রাখতে হবে অন্যদিকে কাস্টমারের কাছ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ রেসপন্স নিতে হবে।

(গ) বিনিয়োগ

আপনাকে এই ইন্ড্রাস্ট্রিতে সাফল্য লাভ করতে হলে, প্রোডাক্ট প্রমোশনের জন্য কিছু পেইড মেথড ব্যবহার করতে হবে। যেমন গুগল অ্যাডওয়ার্ড, ফেসবুক, ইউটিউব অ্যাডভার্টাইজিং, PPC ইত্যাদি। শুরুতে নতুন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার রা বিনিয়োগ করতে চায় না বলে তাদের সাফল্য আসতে দেরি হয়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য কি কি টেকনিক আপনাকে জানতে হবে!!

  • ই-মেইল কালেকশন ( লিস্ট বিল্ডিং ) এবং ই – মেইল মার্কেটিং।
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (ফেসবুক মার্কেটিং)
  • সার্চ ইঞ্জিন ওপটিমাইজেশন
  • নিশ নির্বাচন এবং কী ওয়ার্ড রিসার্চ
  • ওয়েবসাইট তৈরি
  • লিংক বিল্ডিং প্রসেস
  • গুগল অ্যাড ওয়ার্ড
  • ট্রাফিক জেনারেশন
  • কন্টেন্ট ওপটিমাইজেশন
  • ইত্যাদি

আরও পড়ুন : ‘ব্লগ’ কি এবং ‘ব্লগ’ বানিয়ে কিভাবে মাসে লক্ষাধিক আয় সম্ভব – জেনে নিন!!

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো

উপরে বলেছিলাম, যে দুইভাবে করা যায় – ডাইরেক্ট মার্কেটিং করে এবং সেলস ফানেল তৈরি করে। ডাইরেক্ট মার্কেটিং করে আপনি এটাকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে পারবেন না। পেশাদারি কাজ করতে হলে আপনাকে একটি সেলস ফানেল বানাতে হবে। আসুন নিচে আমরা এই বিষয়ে একের পর এক পর্যালোচনা করি।

(১) প্রস্তুতি

প্রস্তুতি নিতে হবে মানসিকভাবে। এই প্রতিজ্ঞা মনে মনে নিতে হবে যে আমি যে কোনো মূল্যেই হোক সফল হবোই। এর জন্য আমাকে যতটা পরিশ্রম করতে হয়, সময় দিতে হয়, পড়াশোনা করতে হয়, শিখতে হয়, যা যা করতে হয় আমি করবো কিন্ত আমি সফল হবোই। নিজের সাথে নিজের এই কমিটমেন্ট টা করতে হবে। এজন্য একটি প্ল্যান তৈরি করুন, অবশ্যই খাতা কলমে। মনে মনে করলে পরে আপনি সব ভুলে যাবেন। কবে থেকে কাজ শুরু করবেন, কত ঘন্টা দিনে কাজ করবেন, কোন কোন ওয়েবসাইট ফলো আপ করবেন, কাজ শেখার জন্য কত ঘন্টা দেবেন ইত্যাদি।

(২) নিশ নির্বাচন

নিশ নির্বাচন এই ইন্ড্রাস্ট্রিতে সাফল্যের হারের উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই আপনাকে বুদ্ধিমত্তার সাথে নিশ নির্বাচন করতে হবে, নাহলে হয়ত আপনি শুরুতেই হেরে বসবেন। প্রথম আপনাকে গুরুত্ব দিতে হবে ‘আপনার কোন বিষয়টি ভালো লাগে’। তারপর আপনি সেই নিশে কী ওয়ার্ড রিসার্চ, কম্পিটিশন ও মার্কেট অ্যানালাইসিস করবেন। নিশ টি আপনার ভালো লাগার বিষয়ে না হলে কিছুদিন পর আপনি কাজ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। আপনার দক্ষতা, নলেজ, কাজ ও আগ্রহের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নিশ সিলেক্ট করবেন। এতে আপনার কাজ করতে সুবিধে হবে এবং অনেক তাড়াতাড়ি সাফল্য পেতে সাহায্য করবে।

উদাহরণস্বরূপ, আপনি রান্না করতে ভালোবাসেন – তাহলে তার রেসিপির একটি ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেলে রান্নায় ব্যবহৃত কুকার ও সরঞ্জামের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। বা আপনি যদি ওয়েব ডিজাইনার হোন থিম, প্লাগিন, SEO tools এর এফিলিয়েট করতে পারেন।

এই ইন্ড্রাস্ট্রিতে কম্পিটিশন অনেক বেশি, আপনার মতো আরো অনেকেই এফিলিয়েট মার্কেটার আছে। সবাই তার প্রোডাক্ট প্রমোশন করছে, সবাই ক্লিক পাচ্ছে। এখানে উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় হলো, ওই ক্লিক থেকে কে কত বেশি সেলস পাচ্ছে। এর জন্য দরকার আপনার ওই নিশ সম্পর্কে দক্ষতা। এটাই আপনাকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখবে, সফল করবে। দক্ষতা মানে ওই নিশ সম্পর্কে আপনার খুঁটিনাটি তথ্য, ধারণা, জ্ঞান। এটাই আপনাকে সাহায্য করবে গুণগত মানের কন্টেন্ট তৈরি করতে, অ্যাড বানাতে, ল্যান্ডিং পেজ বানাতে, ফলো আপ করতে।

এর জন্য আপনাকে ইন্টারনেটে ওই নিশ সম্পর্কে যত তথ্য আছে সব পড়ে ফেলতে হবে, তার উপর একটা নোট বানাবেন, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লিখে রাখবেন এবং ভালো ভালো ওয়েবসাইটের আর্টিকেল প্রিন্ট আউট করে রাখবেন। এরপর ওই নিশের উপর মার্কেটে কি কি ভালো প্রোডাক্ট আছে তা খুঁজে নেওয়া, তার সেলস ভিডিও দেখা, রিভিউ পড়া, ব্লগ বা ইউটিউব ভিডিও গুলোতে নিচে ওই প্রোডাক্ট সম্বন্ধে কমেন্ট পড়া ইত্যাদি। এইসব মিলিয়ে আপনার মার্কেট সম্বন্ধে একটা ধারণা হয়ে যাবে, মার্কেটে কি রকম প্রোডাক্ট আছে, কাস্টমার কি রকম চায়, তাদের কি সমস্যা রয়েছে, কোন প্রোডাক্টের কি কোয়ালিটি ইত্যাদি।

দেখুন তখনই আপনি সাবলীল ভাবে কাজ করতে পারবেন যখন সেই নিশ সম্পর্কে আপনার একটি স্বচ্ছ ধারণা থাকবে। এতে আপনার কাজ করার কনফিডেন্স ও বাড়বে। প্রতিদিন ওই সম্পর্কে কিছু না কিছু নতুন শিখবেন। নতুন তথ্য সংগ্রহ করবেন, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর নতুন নতুন কৌশল সম্বন্ধে জানবেন ইত্যাদি, তবেই আপনার আয় বাড়বে। নচেৎ যতই আপনি কম কম্পিটিশনের নিশ খুঁজে বের করুন না কেনো, আপনার সেই নিশ সম্পর্কে যদি মজবুত বাঁধন না থাকে তাহলে আপনি মার্কেটিং এ আপনার পায়ের মাটি শক্ত করে ধরে রাখতে পারবেন না।

(৩) প্রোডাক্ট নির্বাচন

আপনি যদি নিশ নির্বাচনে ভালো করে সময় দিয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই এই নিশের উপর ভালো মানের প্রোডাক্ট ২ সপ্তাহের মধ্যে খুঁজে পেয়ে যাবেন। ভালো মানের প্রোডাক্টে ভালো সেলস পেজ থাকে, ভালো রিভিউ থাকে, ভালো কাস্টমার সাপোর্ট থাকে, কাস্টমারদের ওই প্রোডাক্টে বেনিফিট থাকে ইত্যাদি। ভালো মানের প্রোডাক্ট অনলাইন সার্চ ভলিউম এর উপর নির্ভর করে না। আপনি গুগলে সার্চ করতে পারেন ‘ how to find a good product for affiliate marketing promotion’, এইভাবে আপনার নিশের উপর ভালো প্রোডাক্ট খুঁজে বের করবেন।

(৪) সেলস ফানেল

সেলস ফানেল হল কাস্টমারকে সেলস পেজ পাঠানোর আগে তাকে ওই প্রোডাক্টটি কেনার জন্য উৎসাহি করে তোলা। যেমন ধরুন কাস্টমার একটি প্রেসার কুকার কিনবে, আপনি যদি তাকে সরাসরি প্রেসার কুকারের সেলস পেজ পাঠিয়ে দেন তবে সেটা ডাইরেক্ট মার্কেটিং হল। কিন্তু তাকে যদি প্রেসার কুকার কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তার ভিডিও পাঠান, দু চারটে প্রেসার কুকারের তুলনা পাঠান কোনটা ভালো হবে ইত্যাদি তাহলে সে এটা কিনতে আরো উৎসাহি হয়ে উঠবে। এটাকে সেলস ফানেল বলে। এরপর আপনি তাকে সেলস পেজ পাঠান বা আর্টিকেল ও ভিডিও এর নিচে তা কেনার লিঙ্ক দিন। আপনার সেলস ফানেল যতো ভালো হবে, আপনার কনভারসন রেট ও ততো বেশি হবে। তাই ভালো সেলস ফানেল বানানোর উপর সময় ও টাকা ইনভেস্ট করার প্রয়োজন হয়। সেলস ফানেল হিসেবে ভিডিও ল্যান্ডিং পেজ, মাইক্রো ব্লগ ও নর্মাল ব্লগ ও ভালো কাজ করে।

(৫) টেস্টিং এবং ওপটিমাইজেশন

সেলস ফানেলের কনভারসন রেট কিরকম তার একটা টেস্ট করতে হবে এবং তার পর সেই ফাইনাল সেলস ফানেলের উপর ইনভেস্ট করা যাবে। এরজন্য আপনি কিছু ট্রাফিক কিনলেন এবং ওই সেলস ফানেলে পাঠালেন। ট্রাফিক ট্রাক করার জন্য আপনি গুগল অ্যানালাইটিকস, hypertracker.comclicky.com এর ব্যবহার করতে পারেন। কোন ট্রাফিক থেকে আপনি কি পরিমাণ লিড পাচ্ছেন এটা adtrackzgold.com থেকে মনিটর করতে পারেন। একই প্রোডাক্টের ভিডিও, ছবি, আর্টিকেল ইত্যাদি সেলস ফানেল পাঠিয়ে দেখবেন কোনটাতে কনভারসন রেট বেশি।

(৬) ট্রাফিক

আপনি যতোই ট্রাফিক নিয়ে আসুন না কেনো আপনার ভালো সেলস ফানেল ই শেষ কথা বলবে। আপনার সেলস ফানেল যতো ভালো হবে আপনার ট্রাফিকের কনভারসন ততো বেশি হবে। নয়ত, সেলস ফানেল ভালো না হলে আপনার ক্লিক আসবে কিন্তু সেলস পাবেন না। তাই ভালো সেলস ফানেল বানাতে ইনভেস্ট করবেন।

কিভাবে ট্রাফিক নিয়ে আসবেন তাইতো! যদি আপনি ফ্রি ট্রাফিক চান, তাহলে নিশ রিলেটেড ফোরামে অ্যাক্টিভ থাকুন, কোরা জাতীয় প্রশ্নোত্তর সাইটে উত্তর দিয়ে, ব্লগ কমেন্ট করে, yahoo answer দিয়ে ইত্যাদি। তবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ ট্রাফিক অনেক বেশি পাওয়া যায়। আপনি পেইড ট্রাফিক নিয়েও কাজ করতে পারেন, pay per click (PPC) কনসেপ্টে। এর জন্য বেশ কিছু ভালো সাইট আছে যেমন ফেসবুক, 7search.com , bidvertiser.com ইত্যাদি। ট্রাফিক নেওয়ার জন্য আপনি একটি ব্লগ তৈরি করতে পারেন এবং তাতে ভালো করে SEO করলে অনেক ট্রাফিক পেয়ে যাবেন। তবে SEO করতে একটু ইনভেস্ট করতে হবে কারণ আমার মনে এক্সপার্ট দিয়ে SEO করানোই বেস্ট। এজন্য আপনি ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট ( odesk/eLance) থেকে SEO এক্সপার্ট হায়ার করতে পারেন ।

এছাড়াও পেইড ট্রাফিক হিসেবে SOLO, SWIPE, PPV, CPV, Mobile Traffic, CPVR ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। এগুলির মাধ্যমেও আপনি খুব ভালো ট্রাফিক জেনেরেট করতে পারবেন।

আপনি ব্যানার অ্যাড দিতে পারেন, এতেও ভালো কনভারসন পাওয়া যায়। আপনি ডাইরেক্ট ভালো ব্লগগুলোর সাথে যোগাযোগ করে অ্যাড দিতে পারেন বা BlogAds.com, centro.net , AdEngage.com ইত্যাদি মিডিয়া সাইটের মাধ্যমে দিতে পারেন।

(৭) ক্যাম্পেইন মনিটরিং ও ইমপ্রুভমেন্ট

আপনি একজন ভালো মার্কেটার হলে আপনি আপনার প্রতিটি অ্যাড ক্যাম্পেইনের প্রতি মূহুর্তের খুঁটিনাটি সম্পর্কে ধারণা রাখবেন। কোন ক্যাম্পেইন থেকে প্রফিট লাভ করছেন আর কোন ক্যাম্পেইন আপনার লসে যাচ্ছে। যদি লসে যায় সেই ক্যাম্পেইন সাথে সাথে বন্ধ করে তার মধ্যে যা সমস্যা আছে সেটা ঠিক করে নিতে হবে। আবার যদি লাভেও যায় তবেও তাকে মনিটর করতে হবে, নয়ত পরে দেখবেন সেটারও পারফরম্যান্স কমে গেল। একটা সেলস ফানেল দিয়ে সারা জীবন কাজ করা যায় না, তার একটা মেয়াদ থাকে। তাই এসব কিছু নিয়ম আপনাকে সব সময় আপডেট থাকতে হবে। আর আপনার ট্রাফিক গুগল অ্যানালাইটিকস ও hypertracker.com জাতীয় ওয়েবসাইট থেকে মনিটর করবেন। আর কোন ট্রাফিক সোর্স থেকে আপনি বেশি লিড পাচ্ছেন, কোন ল্যান্ডিং পেজ ভালো রেসপন্স করছে এসমস্ত তথ্য adtrackzgold থেকে মনিটর করবেন। এবং প্রতিটি সময় ট্রাফিক মনিটর ও ক্যাম্পেইন ইমপ্রুভমেন্ট করার প্রয়োজন হবে। এর দ্বারাই আপনি একজন সফল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে এই ইন্ড্রাস্ট্রিতে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারবেন।

আরও পড়ুন : ‘ফ্রিল্যান্সিং’ বা ‘আউটসোর্সিং’, অনলাইনে কাজ করুন এই ৩৯ টি ওয়েবসাইট থেকে

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কোর্স ও টিউটোরিয়াল

এর উপর আপনি ইউটিউবে অনেক ভিডিও পাবেন, সেগুলো ভালো করে দেখবেন। ভালো ভালো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ইউটিউব চ্যানেলকে ফলো করবেন। এছাড়াও অনেক পেইড কোর্স করায়, সেগুলো জয়েন করে শিখতে পারেন। তবে কোন ওয়েবসাইট থেকে শিখবেন, কার প্রোগাম জয়েন করবেন, সেটা সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করছে। তবে অনলাইন udemy.com এ গিয়ে শিখতে পারেন, এছাড়াও emarketinginstitute.org ওয়েবসাইটটি চেক করতে পারেন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বই ও PDF

অনলাইনে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর অনেক বই, ইবুক, pdf files রয়েছে। সেগুলো আপনি গুগলে সার্চ করে খুঁজে বের করে পড়তে পারেন, ‘affiliate marketing books/ebooks/PDF’ । অ্যামাজনে গিয়ে ইবুক দেখতে পারেন। এছাড়াও iab.com এই ওয়েবসাইটে pdf file দেখতে পারেন। অ্যামাজন থেকে বইয়ের অর্ডার দিতে পারেন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মর্ডান যুগের একটি স্মার্ট পেশা। এই পেশার নিজের একটি স্বতন্ত্রতা আছে। যেমন -ইনকাম করা সম্ভব।

  • অসীম আয় করা সম্ভব।
  • আপনি ঘুমিয়ে থাকলেও আপনার ইনকাম হতে থাকবে।
  • আপনার একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে একাধিক পদ্ধতিতে প্যাসিভ আয় উৎপন্ন করা সম্ভব।
  • স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারেন।
  • এই ইন্ড্রাস্ট্রিতে কাজ করার জন্য কোনো বিড করার প্রয়োজন পড়ে না।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

‘খাতা’ তৈরি করে ব্যবসা

আজকের দিনে খাতার ব্যবহার স্কুল-কলেজ, অফিস- আদালত , দোকান - পত্র সর্বত্রই সারাবছর আছে।  তাই,  আমরা লাইন টানা,  সাদা,  বিঞ্জানের প্র্যাকটিক্যাল খাতা,  হিসাব পত্রের...
- Advertisment -

Most Popular