আজ আমাদের দেশে ইন্টারনেট পরিষেবা ও মোবাইলের ব্যবহার অকল্পনীয় ভাবে বেড়ে গেছে, এছাড়াও সহজলভ্য হয়ে গেছে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট ইত্যাদি ইলেকট্রনিক গ্যাজেট।এই সুন্দর ইন্টারনেট পরিষেবার মাধ্যমে আমরা সারা বিশ্বের সাথে অতি সহজেই যোগাযোগ স্থাপন করতে পারি। আর তাই কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাড়ি থেকে ভালো ভালো কোম্পানির জন্য কাজ করে আমরা খুব ভালো আয় করতে পারি। এই কাজটিকে ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং বলা হয়ে থাকে। যারা এই কাজটি করে তাদের ফ্রিল্যান্সার বলা হয়। এই ফ্রিল্যান্সিং কাজের বিভিন্ন ভাগ আছে – তার মধ্যে যে কাজ গুলো আপনি করতে পারবেন, সেই কাজগুলো আপনার অবসর সময়ে করে কোম্পানিতে বা ওয়েবসাইটে জমা দিতে হয়। আর তার বিনিময়ে ওই কোম্পানি আপনাকে পেমেন্ট করবে।
আপনি এই কাজটি ফুল বা পার্ট টাইম যেভাবে খুশি করতে পারেন। এখানে কাজের কোনো তাড়া নেই, আপনি আপনার পছন্দমতো সময়ে কাজটি কমপ্লিট করে সাবমিট করতে পারবেন। কোনো বস নেই, ডিউটি টাইম নেই, অফিস পলিটিক্স নেই। তাই, এই কাজ করার চাহিদা পুরো ভারতবর্ষে ব্যাপকভাবে বাড়ছে। তরুণ প্রজন্মরাও এই কাজটিকে খুব পছন্দ করছে, কলেজের ছাত্ররা এক্সট্রা সময়ে এই কাজ করে নিজেদের পকেট মানি, খরচ জোগাড় করতে সমর্থ। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৫৬% কর্মী এই কাজের সঙ্গে যুক্ত।বিদেশী কোম্পানিরাও ক্রমশ ভারত থেকে বিভিন্ন অনলাইন কাজের জন্য কর্মী নিয়োগ করছে,তাই বাজারে বাড়ছে ফ্রিল্যান্সারের চাহিদা। আগামি ভবিষ্যতে পুরো বিশ্বে ইন্টারনেট ও মোবাইলের ব্যবহার আরো বাড়বে, তাই কাজের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়তেই থাকবে। আর এই কাজের ভবিষ্যত অনেক উজ্জ্বল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কি কি কাজ করতে হয়:
এখন জেনে নেওয়া যাক, ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলিতে মূলত কি কি কাজগুলো থাকে, যা একজন ফ্রিল্যান্সারকে করতে হয় বা আমরা কি কি ধরনের কাজ পেতে পারি।
এখানে হাজারো রকমের কাজ পাওয়া যায়। প্রতিটি ওয়েবসাইট আলাদা আলাদা কাজকে ফোকাস করে তাদের ওয়েবসাইটে তা প্রাধান্য দেয়। গ্রাফিক্স ও ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, লেখা ও অনুবাদ, ভিডিও ও অ্যানিমেশন, মিউজিক ও অডিও, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট ও প্রোগ্রামিং, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট, কাস্টমার সাপোর্ট,ডাটা এন্ট্রি, ফটোগ্রাফি ইত্যাদি। এই সমস্ত ক্যাটাগরিতে হাজার হাজার কাজ পাওয়া যায়।
কাজ কিভাবে শিখব:
এখন আপনার, আমার সবারই মনে হচ্ছে যে এই কাজগুলো সম্বন্ধে আমার কোনো আইডিয়া নেই, আমি কি ভাবে করবো! যদি কেউ এর মধ্যে কিছু কিছু কাজ জেনে থাকে তবে সেইসব কাজ করে উপার্জন করতে পারে। যদি আপনি নতুন শিখে কাজ করতে চান, তাহলে প্রথমে আপনাকে এর জব ক্যাটাগরি বা বিষয়বস্তুর মধ্যে একটি টপিক বেছে নিতে হবে, যেটাতে মনে হবে আপনার ইন্টারেস্ট আছে বা যে কাজটি আপনি তাড়াতাড়ি ও ভালোভাবে শিখতে পারবেন। এবার যে টপিকটি আপনি পছন্দ করলেন সেটা নিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ করলেন, কিছু কিছু ভালো লেখা পড়লেন, আপনি একটি আইডিয়া পাবেন।
ইউটিউব আজকাল যে কোনো জিনিস শেখার জন্য সবচেয়ে ভালো ও বড়ো প্লাটফর্ম, এবং এখানে সবকিছু ফ্রি তে শেখা যায়, টাকা দিয়ে কোর্সে ভর্তি হতে হয় না। এখানে ওই টপিকটি নিয়ে রিসার্চ করলেন, অনেক ভালো ভালো ভিডিও পাবেন, সেগুলো থেকে অবশ্যই শিখতে পারবেন। এছাড়া অনলাইন কোর্স করায় এরকম অনেক ওয়েবসাইট আছে। যার মধ্যে জনপ্রিয় হল উদেমি,উডাসিটি, বিট ডিগ্রী ইত্যাদি। তবে মূল কথা, প্রাথমিক অবস্থায় এসব জিনিস শেখার জন্য আপনার মূল্যবান সময় ধৈর্য্য ও নিষ্ঠার সাথে আপনাকে এর পেছনে অতিবাহিত করতে হবে। তারপর শেখার পর ,কাজ করতে করতে আপনি জিনিয়াস হয়ে যাবেন আর এসব কাজ তখন আপনার কাছে অনেক সহজ ও মজাদার মনে হবে।
ফ্রিল্যান্স কাজের জন্য সেরা ওয়েবসাইট:
এরপর আমরা আলোচনা করব কিছু টপ ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট সম্বন্ধে, যারা এই কাজ প্রদান করে থাকে এবং কাজ কমপ্লিট করার পর পেমেন্ট করে। এই পেমেন্ট আপনি ডাইরেক্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা পেপাল পেমেন্ট অপশনের মাধ্যমে নিতে পারেন।
Fiverr
বিশ্বের সেরা ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলির মধ্যে fiverr হল অন্যতম। এই ওয়েবসাইটটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে খুব সহজেই কেউ তার পছন্দমতো ফ্রিল্যান্সিং কাজ খুঁজে নিতে পারে। এছাড়াও এটি খুব বিশ্বস্ত ও ভরসা যোগ্য একটি কোম্পানি, কাজ কমপ্লিট হওয়ার খুব তাড়াতাড়ি ও সুরক্ষিত ভাবে পেমেন্ট করে। খুব সুরক্ষিত সিস্টেমের সাথে এরা যে কোনো ফাইল ও তথ্য আদান প্রদান করে। এরা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সম্পূর্ণরূপে গোপন রাখে এবং কাউকে বিক্রি করে না।আপনি এক একটি কাজ কমপ্লিট করার পর সেই কোম্পানিকে কিছু পরিমাণ টাকা সার্ভিস চার্জ হিসেবে দিতে হয়। এদের সার্ভিস চার্জ খুব কম। এখানে আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, লেখা ও অনুবাদ, ভিডিও ও অ্যানিমেশন, মিউজিক ও অডিও, প্রোগামিং ইত্যাদি ক্যাটাগরিতে কাজ করতে পারবেন। এখান থেকে সাইন আপ করুন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
Upwork
বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ফ্রিল্যান্স কাজের ভান্ডার হল upwork. এখানে প্রায় প্রতি বছর ১ কোটি ২০ লাখ ফ্রিল্যান্সার, ৫০ লাখ ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করে থাকে ও ৩০ লাখ কাজের অর্ডার পেয়ে থাকে। এখানে আপনি কাজ করার সময় আপনার ক্লায়েন্টদের ভিডিও ও অডিও কলের মাধ্যমে কাজের স্যাম্পল দেখাতে পারবেন। যারা ঘন্টা ভিত্তিক চুক্তিতে কাজ করে, তাদের জন্য এই ওয়েবসাইটটি একটি ওয়ার্ক ডায়রি তৈরি করে রাখে,ওখানে কত ঘন্টা কাজ করেছেন তা সঠিকভাবে বোঝা যায়, এতে বিলিং করতে সুবিধে হয়। কাজ কমপ্লিট হওয়ার এরা খুব দ্রুত ও সুরক্ষিত পেমেন্ট করে থাকে।
Freelancer.com
ফ্রিল্যান্সিং জগতে freelancer.com এমন একটি ওয়েবসাইট যেখানে সার্ভিস বিক্রেতা ও ক্রেতা এক জায়গায় মিলিত হয়। আপনার ক্লায়েন্ট আপনার দক্ষতা পূর্ণ প্রোফাইল চেক করে আপনাকে সেই প্রোজেক্টের কাজের ভার দিতে পারে। এই ওয়েবসাইটটি আজকাল প্রচুর জনপ্রিয়তা লাভ করেছে তার কারণ হল আপনার পেশাদারী,ক্রিয়েটিভ পরিষেবাগুলি সহজেই বাজারজাত করতে এটি প্রযুক্তিগত সহায়তা করে থাকে। এছাড়াও আপনি কাজ নিয়ে ক্লায়েন্টের সাথে সরাসরি চ্যাটের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন।
Guru
গুরু ওয়েবসাইটের স্পেশাল ফিচার হল আপনি যদি এই কোম্পানির সাথে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে থাকেন তবে এই কোম্পানি আপনাকে নতুন কাজ পেতে বা ভালো প্রজেক্টে কাজ করতে সুবিধে পাইয়ে দেয়। এখানে আপনি ডাটা এন্ট্রি, সফ্টওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, লেখা, অ্যাকাউন্টিং, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট সহ বিভিন্ন কাজ করতে পারেন। এর শক্তিশালী ড্যাশবোর্ড দক্ষ ব্যাক্তি ও ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে। এছাড়াও আপনি ক্লায়েন্টের সাথে ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন ও কাজ কমপ্লিট হওয়ার পর সুরক্ষিত ভাবে পেমেন্ট পেয়ে যাবেন।
Cloud Peeps
আপনি যদি খুব ট্যালেন্টেড হন এবং উচ্চ স্তরে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে cloudpeeps এ কাজ খোঁজা আপনার জন্য অনেক সহজ। এজন্য আপনাকে একটি ভালো পোর্টফোলিও তৈরি করতে হবে। সাধারণ ক্ষেত্রে এখানে কাজ পাওয়া একটু কঠিন কিন্তু আপনি যদি যোগ্য হন তবে কাজ পাওয়া অনেক সহজ। এরা মূলত মার্কেটিং, কনটেন্ট রাইটিং, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদির বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
College Recruiter
এই ওয়েবসাইটটি নব্য নতুন ছাত্রদের জন্য কি কি কাজ থাকতে পারে বা তারা কি কি কাজ করতে পারে তার একটি তালিকা নিয়ে আসে। এই ওয়েবসাইটটি ব্রাউজ করে কাজগুলি অবশ্যই করতে পারেন। এতে আপনার ভবিষ্যতের অভিজ্ঞতা ও কাজের পরিচিতি বাড়াতে সাহায্য করবে।
Service Scape
আপনি যদি ফ্রিল্যান্স কাজে দক্ষ ও অভিজ্ঞ হন তবে এখানে কাজ পেয়ে যাবেন। এখনো পর্যন্ত তারা ৯০,০০০ এরও বেশি ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করেছেন এবং ৩ লাখ এর বেশি প্রজেক্ট সাফল্যের সাথে শেষ করেছেন।
Craigslist
ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটের মধ্যে অন্যতম একটি নামকরা সাইট হল ক্রেগসলিস্ট। এখানে আপনি আপনার কোনো দ্রব্য বিক্রি করা ছাড়াও অন্যান্য কাজ ও জবের জন্য পোস্ট করতে পারেন।
Indeed
এটিও একটি ফ্রিল্যান্সিং শীর্ষস্থানীয় ওয়েবসাইটের তালিকায় আসে। এই ওয়েবসাইটটি জব সংক্রান্ত সমস্ত বিবরণ সংগ্রহ করে রাখে এবং আপনি যখন কোনো জবের জন্য সার্চ করবেন, এটি তখন আপনাকে সেটা দেখাবে।
ডিজাইনার দের জন্য বেস্ট ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট:
Dribbble
এখানে সমস্ত ডিজাইনারের ডিজাইন দেখতে পারবেন এবং আপনার ডিজাইনের জন্য ক্লায়েন্ট ও অন্য ডিজাইনারের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পাবেন। এই ওয়েবসাইটটি ব্রাউজ করলে আপনি লেটেস্ট ডিজাইন ও ভবিষ্যতে কি কি কাজ করতে পারবেন তার একটি অনুমান পেয়ে যাবেন।
99 Designs
এটি তথাকথিত ফ্রিল্যান্স ওয়েবসাইট থেকে একটু আলাদা। এখানে ক্লায়েন্ট দ্বারা ডিজাইনের প্রতিযোগিতা প্রকাশ করা হয় এবং বিভিন্ন ডিজাইনাররা তাদের কাজ এখানে জমা দেয়। ক্লায়েন্টরা তাদের পছন্দমতো নকশাটি গ্রহণ করে এবং তার ডিজাইনারকে অর্থ প্রদান করে। যদি এখানে আপনি প্রতিযোগিতায় জেতেন তবে আপনার একটি শক্তিশালী পোর্টফোলিও তৈরি হবে এবং ভবিষ্যতে অনেক কাজ পেতে আপনাকে সাহায্য করবে।
Art Wanted
আপনি যদি শিল্প ভালোবাসেন এবং গ্রাফিক ডিজাইনার বা ভালো ডিজিটাল চিত্রকর হন তাহলে এই ওয়েবসাইটে আপনার কাজের একটি পোর্টফোলিও তুলে ধরুন। ক্লায়েন্টরা তাদের কাজের জন্য আপনাকে সার্চ করবে এবং যোগাযোগ করবে।
Design Crowd
এটি 99 design এর মতোই একটি ওয়েবসাইট। তবে এরা কাজের জন্য কম অর্থ দিয়ে থাকে সেজন্য ভালো ভালো ডিজাইনারের সংখ্যা এখানে খুব কম। তাই এখানে কাজ পাওয়ার প্রতিযোগিতাও কম। আপনি যদি এই কাজে নতুন ও অনভিজ্ঞ হয়ে থাকেন, তাহলে এখানে কাজ খুঁজতে পারেন।
Coroflot
আপনি যদি ডিজাইনারের কাজে কিছুটা অভিজ্ঞ হন তাহলে এখানে কাজের জন্য একটি পোর্টফোলিও তৈরি করতে পারেন। এই ওয়েবসাইটটি কাজ অনুযায়ী ক্লায়েন্ট ও ডিজাইনারের সাথে একটি সংযোগ স্থাপন করে।
মার্কেটারদের জন্য বেস্ট ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট:
People Per Hour
ফ্রিল্যান্সার বিশেষ করে মার্কেটারদের জন্য এই ওয়েবসাইটটি বিশেষভাবে কাজ করে। আপনি যদি সফ্টওয়্যার ইন্জিনিয়ার বা SEO বা ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করে থাকেন, এখানে আপনি সহজেই কাজ পেতে পারেন। এখানে প্রতি ঘন্টা ভিত্তিতে কাজ করে সেই হিসেবে পেমেন্ট নিতে পারেন।
Aquent
এটিও একটি শীর্ষস্থানীয় ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট যারা প্রধানত মার্কেটিং কাজের উপর জোর দিয়ে থাকে। এই প্ল্যাটফর্মটি ক্লায়েন্ট ও ফ্রিল্যান্সার দের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে সাহায্য করে, এরা কোনো কাজের জন্য ফ্রিল্যান্সারদের একটি গ্রুপ তৈরি করে। মার্কেটিংয়ের কাজ ছাড়াও প্রযুক্তি, ক্রিয়েটিভিটি , ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি কাজ করে থাকে।
Remotive
মার্কেটিং এর কাজ খোঁজার এই ওয়েবসাইটটি একটি স্ট্যান্ডার্ড প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে। এই ওয়েবসাইটটি ফ্রিতে ব্রাউজ করে আপনি জানতে পারবেন কাজের লোকেশন, কি কাজ ও কাজটি কবে পোস্ট করা হয়েছে।
লেখকদের জন্য বেস্ট ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট:
Contena
লেখালেখির জন্য যে সমস্ত ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট আছে তার মধ্যে এই ওয়েবসাইটটি সবথেকে শীর্ষে। কারণ এই ওয়েবসাইটটি সবথেকে বেশি পেমেন্ট ও উচ্চ মানের কাজ পাইয়ে দিয়ে থাকে। এছাড়াও এদের এই প্ল্যাটফর্ম থেকে ফ্রিল্যান্সিং জব ও ফুলটাইম রিমোট চাকরিও পেতে পারেন। এখানে অনেক বিষয় আছে যেগুলিতে আপনি লিখে কাজ করতে পারেন যেমন স্পোর্টস, ই – বুক রাইটিং, ফটোগ্রাফি বিষয়ক , প্রযুক্তিগত এবং আরো অনেক কিছু।
All Freelance Writing
আপনি এই ওয়েবসাইটে লেখালেখির উপর কি কি জব পোস্ট করা হয়েছে তা অনুসন্ধান করতে পারেন এবং তার জন্য ফ্রিতে আবেদন করতে পারেন। এবার ক্লায়েন্ট ওই কাজের জন্য তার কি বাজেট আছে তা জানাবে, এরপর আপনার পছন্দ হলে আপনি ওই কাজটি করতে পারেন।
Freelance Writing
ফ্রিল্যান্স লেখকদের জন্য এটি একটি দুর্দান্ত ওয়েবসাইট।আপনি আপনার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কি ধরনের কাজ করতে চান তা এখান থেকে সহজেই অনুসন্ধান করে নিতে পারবেন।
Freedom With Writing
আপনি শুধু এই ওয়েবসাইটটি থেকে নিউজলেটারটি পড়ারই সুযোগ পাবেন না, এর সাথে আপনার লেখাও শেয়ার করতে পারেন। এরজন্য আপনাকে পেশাদারী ও অভিজ্ঞ হতে হবে। এর জন্য এরা খুব ভালো অর্থ প্রদান করে থাকে।
Freelance Writing Gigs
শক্তিশালী ড্যাশবোর্ডের সাথে এই ওয়েবসাইটটি লেখালেখি ফ্রিল্যান্সিং জবের অন্যতম ওয়েবসাইট। এটা প্রতি সপ্তাহে নতুন নতুন ক্লায়েন্ট ও কাজ নিয়ে আপডেট দেয়, যা থেকে কাজ করে ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
ডেভলপারদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট:
Lorem
ওয়েবসাইট ডেভলপারদের জন্য কাজের সম্ভার নিয়ে এই ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটটি খুব দ্রুত ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ওয়েবসাইট ডিজাইনিং, বিল্ডিং এবং ফিক্সিং এর মতো কাজগুলো এখানে করানো হয়। তবে এর জন্য আপনাকে এক্সপার্ট হতে হবে।
Rent a Coder
যে সমস্ত ফ্রিল্যান্সাররা প্রোগ্রামিং, ডেভলাপিং,ওয়েবসাইট ডিজাইনিং ইত্যাদি কাজে সিদ্ধহস্ত তারা এই ওয়েবসাইটটিতে নিজেদের কাজ খুঁজে নিতে পারেন। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
10 x Management
ডেভেলপার থেকে সাইবার সুরক্ষা প্রায় সমস্ত ধরনের প্রযুক্তিগত কাজের জন্য এটি বেস্ট সাইট। তবে এর জন্য আপনাকে যথেষ্ট ট্যালেন্টেড এবং পেশাদারী হতে হবে। আপনার মধ্যে যদি উৎসাহ থাকে তবে আপনি সম্ভাবনা দেখতে পাবেন।
Gigster
এটিও একটি দুর্দান্ত ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট। এখানে ওয়েবসাইট ডিজাইনিং, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, সফ্টওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি কাজের জন্য এই ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করতে পারেন।
বেস্ট ফটোগ্রাফি ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট:
Photography Jobs Finder
আপনি যদি ফটোগ্রাফি করতে ভালোবাসেন আর উচ্চমানের ফটোগ্রাফি করতে পারেন। এই ওয়েবসাইটটিতে আপনার একটি পোর্টফোলিও আপলোড করে রাখুন, ক্লায়েন্টরা আপনাকে খুঁজে পেতে সক্ষম হবেন।
Photography Jobs Central
ফটোগ্রাফি কাজের জন্য এটি একটি শীর্ষস্থানীয় ওয়েবসাইট। এখানে হাজার হাজার সক্রিয় পোস্ট রয়েছে ফটোগ্রাফি কাজের জন্য। তবে এরা এর জন্য কিছু টাকা প্রিমিয়ার মেম্বারশিপের জন্য চার্জ করে, এতে যারা শুধুমাত্র সিরিয়াস কাজ করতে চায়, তারাই যোগদান করে এবং কাজ পাওয়ার প্রতিযোগিতা অনেক কমে যায়।
Shutterstock
ফটোগ্রাফির অন্যতম বৃহৎ ওয়েবসাইট হল শাটারস্টক। এখানে আপনি আপনার অ্যাকাউন্ট তৈরি করে আপনার তোলা ফটোগ্রাফি গুলি আপলোড করতে পারেন। এরপর যদি আপনার জমা দেওয়া ফটোগুলি কেউ যদি ব্যবহার করে আপনি তা থেকে কমিশন হিসেবে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টের জন্য বেস্ট ওয়েবসাইট:
Time etc
আপনি যদি ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টের জব খুঁজছেন, আপনি এই ওয়েবসাইটটিতে আপনার জন্য জব পেয়ে যেতে পারেন।
Assistant Match
আপনি আপনার স্কিল অনুযায়ী আপনার একটি পোর্টফোলিও দিয়ে রাখবেন, সঠিক ক্লায়েন্টরা আপনার সাথে আপনার স্কিল দেখে যোগাযোগ করবে।
Belay
এই কোম্পানিটি তাদের ক্লায়েন্টের জন্য ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রদান করে থাকে। তাই আপনি এখানে আপনার কাজে জন্য অ্যাপ্লাই করতে পারেন।
Boldly
আপনি যদি একাধিক আন্তর্জাতিক ভাষায় কথা বলতে পারেন, তাহলে এই ওয়েবসাইটটিতে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট জবের জন্য অ্যাপ্লাই করতে পারেন। তবে এরা প্রিমিয়াম প্ল্যানে কাজ করে, এখানে আপনাকে টাকা খরচ করে মেম্বারশিপ কিনতে হবে। তবে কাজের জন্য এরা খুব ভালো পেমেন্ট করে থাকে।
ভিডিও এডিটরের জন্য বেস্ট ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট:
Behance
এই ওয়েবসাইটটি ভিডিও এডিটরদের জন্য উপযুক্ত স্হান। এখানে তারা তাদের একটি পোর্টফোলিও আপলোড করতে পারে, যা দেখে ক্লায়েন্টেরা তাদের সাথে যোগাযোগ করবে। এছাড়া এই ওয়েবসাইটটি প্রতিদিন নতুন নতুন কাজের আপডেট দেয়।
Stage 32
ভিডিও এডিটিং কাজের জন্য আপনি এই ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটটি চেক করতে পারেন। এটিও একটি দুর্দান্ত ওয়েবসাইট।
Assemble.tv
এই ওয়েবসাইটে কপিরাইটার, ভিডিও এডিটর, ফটোগ্রাফার, ডাইরেক্টর, নির্দেশক, আর্টিস্ট সবার জন্য কাজ আছে। তবে এর জন্য এরা একটি টেস্ট নেয়, তাতে পাস করলে এই কাজের জন্য সিলেক্ট হতে পারেন।
বেস্ট কাস্টমার সাপোর্ট ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট:
Virtual Vocations
আপনি যদি ভার্চুয়ালি কাস্টমার সাপোর্ট বা কেয়ারে কাজ করতে চান, তবে এই ওয়েবসাইটটিতে নিজের কাজ খুঁজে নিতে পারেন।
Support Driven
এই ওয়েবসাইটটিও কোম্পানির কাস্টমার সাপোর্ট কাজের জন্য প্রার্থী বা ফ্রিল্যান্সারদের যোগাযোগ করিয়ে দেয়। তাই আপনি এখানেও কাজের জন্য অ্যাপ্লাই করতে পারেন।
We Work Remotely
এই ওয়েবসাইটটিও প্রায় সমস্ত ধরনের কাজের জন্যই জব পোস্ট করে থাকে তবে প্রধানত কাস্টমার সাপোর্টের কাজগুলো এখান থেকে পেয়ে যাবেন।
এই ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলির মধ্যে কিছু কিছু ওয়েবসাইট আছে যারা এই কাজগুলো সম্পূর্ণ ফ্রিতে প্রদান করে বাকি ওয়েবসাইটগুলো কাজের জন্য কিছু প্রিমিয়ার চার্জ নেয়।